জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর দু’টি বিপরীত শব্দ। যারা ভাল ও নেক আমল করবে, আল্লাহ ও তদীয় রসূলের আদেশ-নিষেধকে নিঃশর্তভাবে মেনে চলে নিজের জীবন পরিচালনা করবে তাদের জন্য রয়েছে পরকালে সর্বোচ্চ সুখ ও শান্তির বাসস্থান জান্নাত। সেখানে তারা অনন্ত ও অসীম কাল অবস্থান করবে। আল্লাহতা’য়ালা মু’মিনদের জন্য জান্নাতে এতো অফুরন্ত সুখ-শান্তি ও আরামের ব্যবস্থা করেছেন যা দুনিয়াতে বসে কল্পনাও করা সম্ভব নয়। জান্নাতের বিবরণ দিতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন-‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন- আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য জান্নাতে এমন সব নেয়ামত তৈরি করে রেখেছি যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং কোন মানুষের অন্তরও সে সম্পর্কে কোন ধারণা রাখে না। (বুখারী ও মুসলিম)
পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ ও তার রসূলের আদেশ-নিষেধকে অমান্য করবে, নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবে এবং শরীয়তের বিধানের সীমা লংঘন করবে তাদের জন্য রয়েছে পরকালে যন্ত্রণাদায়ক অগ্নিশিখার বাসস্থান জাহান্নাম বা নরক। সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে, সেখান থেকে ফিরে আসার কোন সুযোগ নেই। মানুষের আমলের ওপরই তার ফলাফল নির্ভর করবে। এই দুনিয়াতে যা আমল করবে পরকালে তার পূর্ণ ফলাফল পাবে, ভাল ও নেক কাজ করলে জান্নাত আর গুনাহ ও অন্যায় করলে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
দুনিয়ার সাথে জান্নাতের তুলনা করা অসম্ভব। দুনিয়ার সকল সুখ-শান্তি আরাম-আয়েশ ও চাওয়া-পাওয়ার চেয়ে বেশি সুখ-শান্তি আল্লাহতা’য়ালা মু’মিন বান্দাদের জান্নাতে দেবেন। বান্দা যা কখনো ভাবতে বা কল্পনাও করতে পারেনি। জান্নাতিরা সেখানে যা চাবে তাই দেয়া হবে। সেখানে কোন বাধা-নিষেধ নেই। জান্নাতের প্রাসাদ তৈরী হবে স্বর্ণের ও রৌপ্যের ইট দিয়ে। আল্লাহ সেখানে অসংখ্য নেয়ামতের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। যার বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না। এ সম্পর্কে আল্লাহতা’য়ালা বলেন, নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমানদারী রয়েছে। (সূরা কাহাফ-১০৭)। তিনি আরো বলেন, ‘যারা ভাগ্যবান তারা জান্নাতে বসবাস করবে এবং সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। (সুরা হুদ-১০৮) যারা ঈমান আনবে সত্ ও ভাল কাজ করবে তারা জান্নাতে যাবে। আর অফুরন্ত সুখ ও শান্তিতে বসবাস করবে। পক্ষান্তরে যারা গুনাহগার হবে তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আল্লাহতা’য়ালা বলেন,‘যারা হতভাগ্য তারা জাহান্নামে যাবে। সেখানে তারা আর্তনাদ ও চিত্কার করতে থাকবে’ (সূরা হুদ-১০৬)।