কম্পিউটারের ব্যবহার এখন সর্বত্র। আমরা দিন দিন কম্পিউটার নির্ভর হয়ে যাচ্ছি। আর এ নির্ভরতায় আমরা ভুগছি শারীরিক নানা উপসর্গে। সম্প্রতি এমনি এক ধরনের রোগ হলো ইকনমি ক্লাস সিনড্রোম। কিছুদিন পূর্বে নিউজিল্যান্ডের এক কম্পিউটার ব্যবহারকারী তার বিশেষ কাজে একরকম বিরতি ছাড়াই একদিনে একটানা প্রায় ১৮ ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করছিলেন। একসময় হঠাত্ তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখতে পান-একটানা কাজ করতে গিয়ে এবং একটানা বসে থেকে তার পায়ের রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এভাবে জমাট বাঁধতে বাঁধতে তা ফুসফুসেও চলে আসায় সেখানে তার রক্ত চলাচলে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। একসময় শ্বাসকষ্ঠ হতে থাকে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। নিউজিল্যান্ডের ডাক্তাররা বলেছেন, ১৮ ঘণ্টা কেন ২৪ ঘণ্টা কম্পিউটারে বসে কাজ করলেও তার তেমন কোনো সমস্যা হতো না-যদি না কাজের মাঝে সে হাত-পায়ের নড়াচড়া অব্যাহত রাখত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা বসে কম্পিউটারে বসে কাজ করলে হাতের আঙ্গুল ছাড়া তেমন কোনো অঙ্গ সঞ্চালন হয় না। ফলে রক্ত জমাট বাঁধাই স্বাভাবিক। আর পায়ের রক্ত জমাট বাঁধা শুরু হলে তা দ্রুত ফুসফুসে ছড়ায়। ডাক্তাররা এ রোগটির নাম দিয়েছেন-ইকনমি ক্লাস সিনড্রোম। চিকিত্সা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে ডিপ ভেইন সিনড্রোম নামেও অভিহিত করা হয়।
এ সমস্যা এড়াতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা ব্যবহারকারীদের জন্য কয়েকটি পরামর্শ দেন।
০০ যখন কম্পিউটার ব্যবহার করবেন-১৫ মিনিট অন্তর চোখ মনিটর থেকে সরিয়ে নিন।
০০ কম্পিউটারে কাজ করার সময় হাত-পা যথাসম্ভব নাড়াচড়া করতে হবে। মাঝে মধ্যে হাঁটাচলা করে আবার কাজ শুরু করা যেতে পারে।
০০ প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
০০ প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ৫ মিনিট চোখ ও হাত-পায়ের ব্যায়াম করতে হবে।
আশা করা যায়, এভাবে চললে ইকনমি ক্লাস সিনড্রোমের মতো ভয়াবহ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন