গলগণ্ড বা ঘ্যাগ হলো অস্বাভাবিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত থায়রয়েড গ্রন্থি। থায়রয়েড গন্থিটি গলার সামনের দিকের নিচের অংশে থাকে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় এটির অবস্থান দৃশ্যমান নয়। থায়রয়েড গ্রন্থির আকার অনেকটা প্রজাপতির মতো। দু'পক্ষের দু'টি ডানার মতো অংশ (লোব) একটি সংক্ষিপ্ত ও দেহ (ইয়ামাথ) দিয়ে সংযুক্ত থাকে। গ্রন্থিটি যখন আকার-আয়তনে বড় হয় (গলগণ্ড) তখন তা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয় এবং খাবার সময় বা কথা বলার সময় এর নড়াচড়া বিশেষভাবে বুঝা যায়। থায়রয়েড গ্রন্থি বিভিন্ন কারণে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো পিটুইটারি গ্রন্থি হতে অধিকা কাজ করার নির্দেশপ্রাপ্ত হওয়া। আবার খাদ্যে আয়োডিনের অভাব থাকলেও থায়রয়েড গ্রন্থিটি ক্রমশ বড় হতে থাকবে। আয়োডিনের ঘাটতি বাদেও কিছু কিছু খাবার বেশি পরিমাণে এবং অনেকদিন ধরে খেতে থাকলেও আয়োডিনের কার্যকারিতা হ্রাস পায় এবং গলগণ্ড হতে পারে। এসব খাবারের মধ্যে আছে পাতাকপি, ব্রকলি, ফুলকপি, সয়া জাতীয় খাদ্য ইত্যাদি। কিছু কিছু ওষুধও থায়রয়েড গ্রন্থি বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। থায়রয়েড নড্যুল, ক্যান্সার ও হাইপো থায়রয়েডিজম ও হাইপার থায়রয়েডিজমের জন্যও গলগণ্ড হতে দেখা যায়। গলগণ্ডের লক্ষণসমূহ হঠাৎ করে শুরু হয় না বরং অনেকদিন ধরে ধীরে ধীরে গলগণ্ড হতে থাকে। এর প্রধানতম লক্ষণ হলো গলার সামনের দিকের মাঝখানের নিচের অংশ বা দু'পাশ ফুলে ওঠা। রোগী সাধারণত নিজে থেকে প্রথমে এ সমস্যাটি শনাক্ত করতে পারে না। এটি এত ধীরে ধীরে হয় যে, অন্য কেউ বলার পরও রোগী সন্দিহান থাকতে পারে । কিন্তু তারপর দেখা যাবে এ গ্রন্থিটি ক্রমশ বৃহদাকার হয়ে যাচ্ছে। থায়রয়েড গ্রন্থির বৃদ্ধিপ্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে খেতে বা ঢোক গিলতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। গলগণ্ড খুব বড় হলে শ্বাস-প্রশ্বাসেও সমস্যা হতে পারে। মেয়েদের ঋতুস্রাবের সময় ও গর্ভাবস্থায় গলগণ্ড সাময়িকভাবে আরও বড় হয়। হাইপার থায়রয়েডিজমের গলগণ্ডের লক্ষণগুলোর সঙ্গে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, অস্থিরতা, দ্রুত ওজন কমে যাওয়া, গরম অসহ্য লাগা, হাত কাঁপা ও ডায়রিয়া থাকতে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে থায়রয়েড গ্রন্থির ক্যান্সারের জন্যও গলগণ্ড দেখা দিতে পারে।
যে কোনো বয়সে থায়রয়েড ক্যান্সার হতে পারে যদিও চার দশকের কাছাকাছি বয়সে বেশি সংখ্যক রোগীকে শনাক্ত করা হচ্ছে। গলগণ্ড হয়েছে বা হচ্ছে মনে হলেও চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। আমাদের দেশের অনেকেই এ ব্যাপারে অনীহার জন্য রোগীকে ও তার পরিবারকে যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়। গলগণ্ডের সম্ভাব্য রোগীকে চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা, আলটাসনোগ্রাম থেকে শুরু করে বায়োপসি ও রেডিও অ্যাকটিভ আয়োডিন আপটেক পরীক্ষা পর্যন্ত করতে পারেন। গলগণ্ডের কারণ নির্ধারিত হওয়ার পর এর চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক করা হয়।
যে কোনো বয়সে থায়রয়েড ক্যান্সার হতে পারে যদিও চার দশকের কাছাকাছি বয়সে বেশি সংখ্যক রোগীকে শনাক্ত করা হচ্ছে। গলগণ্ড হয়েছে বা হচ্ছে মনে হলেও চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। আমাদের দেশের অনেকেই এ ব্যাপারে অনীহার জন্য রোগীকে ও তার পরিবারকে যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়। গলগণ্ডের সম্ভাব্য রোগীকে চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষা, আলটাসনোগ্রাম থেকে শুরু করে বায়োপসি ও রেডিও অ্যাকটিভ আয়োডিন আপটেক পরীক্ষা পর্যন্ত করতে পারেন। গলগণ্ডের কারণ নির্ধারিত হওয়ার পর এর চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন