মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০১১

পৃথিবীতে যতগুলো স্বায়ত্তশাসিত উপদ্বীপ রয়েছে তার মধ্যে ফিলিপাইনের মিন্দানাও অন্যতম। ফিলিপাইনের অদূরে মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরে মিন্দানাও দ্বীপটি অবস্থিত। ১৫০০ সালের পূর্ব পর্যন্ত এই দ্বীপে কোনো লোকবসতি ছিল না। ১৫০০ সালের পর যখন ফিলিপাইনের জনসংখ্যা বাড়তে থাকে তখন ফিলিপাইন সরকার মিন্দানাও দ্বীপে লোক পাঠাতে শুরু করে এবং সেখানে তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এভাবে ক্রমে মিন্দানাও দ্বীপে লোকবসতি বিস্তার লাভ করে। মিন্দানাও দ্বীপটির চতুর্দিকে পানি আর পানি, কখনো কখনো সামুদ্রিক ঢেউয়ে সংকুচিত হয় দ্বীপটি। রহস্যঘেরা দ্বীপটিতে রয়েছে অসংখ্য মসজিদ, গির্জা ও মন্দির। মিন্দানাও দ্বীপে যারা বসবাস করে তাদের অধিকাংশই মুসলমান। শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এ দ্বীপটি পর্যটন-শিল্পের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর জাহাজে করে শত শত পর্যটক ঘুরতে আসে মিন্দানাও দ্বীপে। এর চতুর্দিকে সামুদ্রিক পানির গর্জন, বালুময় উপকূল, অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দ, মনমাতানো নৈসর্গিক দৃশ্য পর্যটক মাত্রই আকর্ষণ করে। মিন্দানাও দ্বীপের অধিকাংশ মুসলিম। ১৯৭২ সালে ফিলিপাইনের স্বৈরশাসক ফার্ডিনান্ড মার্কোস ক্ষমতায় এসে মুসলমানদের ওপর দমন-নিপীড়ন শুরু করেন। সেই থেকে মিন্দানাওবাসী একত্রিত হয়ে স্বায়ত্তশাসন দাবি করে এবং স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সরকারবিরোধী গেরিলা আন্দোলন শুরু করে। এতে ফিলিপাইন সরকার ও মিন্দানাওবাসীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে প্রায় ৫০ হাজার লোক হতাহত হয়। দীর্ঘ ২৪ বছর পর কেন্দ্রীয় সরকার স্বায়ত্তশাসন দিতে রাজি হয়। বর্তমান মিন্দানাও একটি স্বায়ত্তশাসিত উপদ্বীপ। স্বায়ত্তশাসিত হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব রয়েছে মিন্দানাওবাসীর ওপর। যে কোনো সমস্যায় কেন্দ্রীয় সরকার মিন্দানাওবাসীকে সহায়তা করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য জাতীয় সমস্যায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার শুধু সহায়তা করে না বরং সহায়তা গ্রহণও করে। প্রতি বছর পর্যটনশিল্প থেকে যে আয় হয় তার ৫০ ভাগ লুফে নেয় ফিলিপাইন সরকার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন