আমরা ওজন কমাতে চাই, স্লিম থাকতে চাই। ভালো কথা। এজন্য খাদ্যের দিকে কেবল নজর, কিন্তু কী পানীয় গ্রহণ করছি সেদিকে তেমন লক্ষ্য নেই। বড় ভুল। আমেরিকানরা প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করেন এর এক পঞ্চমাংস আসে পানীয় থেকে। আমাদের দেশেও প্রচুর পানীয় বিশেষ করে কোমল পানীয় পান করেন লোকজন, বিশেষকরে তরুণরা। সঠিক পানীয় উদ্দীপ্ত করে বিপাক, কমায় ক্ষুধা, কমায় মোট ক্যালোরি। কিছু কিছু পানীয় তাই হিতকর আবার কোনও কোনওটি ক্ষতিকর। বিশেষ করে ওজন হ্রাসের জন্য।
সোডা জাতীয় পানীয় মোটেই হিতকর নয়:প্রতিবার এক বোতল সোডা পান মানে শত শত শূন্য ক্যালোরি গ্রহণ। অনেকে ডায়েট সোডার কথা বলেন তবে এতে লাভ হয় তেমন একটা হয় বলে মনে হয় না।
সব চেয়ে হিতকর হলো ‘পানি পান’: কার্বনেটেড কোমল পানীয়ের বদলে ‘কেবল পানি পান’ করলে প্রতি দিনে শত শত ক্যালোরি গ্রহণ থেকে বাঁচা যায়। হিত এখানেই শেষ হয় না। খাওয়ার আগে দুগ্লাস পানি পান করলে পাকস্থলী অনেক দ্রুত ভরাট বোধ করে, তাই খাওয়া হয় কম। এছাড়া নতুন গবেষণায় দেখা যায়, প্রচুর পানি পান করলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে দেহ বিপাকের উপর।
ফলের রস:ফলের রসে ক্যালোরি বেশ বেশি থাকে ঠিক তবে তা শূন্য ক্যালোরি নয় সোডার মত। এতে আছে পুষ্টি উপকরণ। বাড়তি চিনির সঙ্গে ভিটামিনও এন্টি অক্সিডেন্টও লাভ করা হয়। একটি বিকল্প ১০০% ফলের রস। কেবল ফলের রস এর সঙ্গে বাড়তি মিষ্টি যোগ না করলে হয়। আবার ফলের রসের সঙ্গে পানি মিলিয়ে পান করলেও কিছু ক্যালোরি কমে।
সবজির রস বেশ ভালো: সবজির রস বেশ পুষ্টিকর, ফলের রসের অর্ধেক ক্যালোরি। এক কাপ টমেটো জুসে আছে ৪১ ক্যালোরি, কমলার রসে সে পরিমাণে রয়েছে ১২২ ক্যালোরি। ফলের নরম শাস বা সবজির শাস সহ জুসে আঁশও পাওয়া যায় ভালো। বাজারে ভেজিটেবল মকেটল বেরিয়েছে এগ্রোভিত্তিক, খামার যারা করেন এদের তৈরি। খেতে মন্দ লাগলো না। ক্ষুধাও কমে যায়।
স্মুথি: এক কলা, স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরি মিশিয়ে স্মুথি তৈরি করলে মজা। এ থেকে পাওয়া যায় রোগ প্রতিরোধী ভিটামিন ও খনিজ দ্রব্যের সমাহার। ঘরে তৈরি ভালো সবচেয়ে। ননীতোলা দুধ ও তাজা বা হিমায়িত ফল। রেস্তোরার স্মুথিতে থাকে আইসক্রিম, ননী, মধু ও অন্যান্য মিষ্টক দ্রব্য যাতে ক্যালোরি মান উঠে তুঙ্গে।
লো-ফ্যাট দুধ:ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরের হিত হয়, তবে এতে শরীরের ওজন কমেনা। কম চর্বি দুধ, দধি ও পনির খেলে হয়।
ক্ষতিকর হলো এনার্জি ড্রিংক: সোডার মতই ক্যালোরি বোমা হলো স্ট্রোটস্ ও এনার্জি ড্রিংক। এদের মধ্যে পুষ্ট গোণ করা হলেও অনেক কম ক্যালোরি খাদ্যেও থাকে সে সব পুষ্টি। যারা ওজন কমাতে চান এবং স্লিম থাকতে চান তারা এসব পানীয় না পান করে কেবল শুধু পানি পান করবেন।
কালো কফি:ক্যাফিন চাই সামান্য। সোডা বা এনার্জি ড্রিংকের চেয়ে কফি ভালো। ব্ল্যাক কফি হলো ক্যালোরি মুক্ত এন্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর। মধ্যম পরিমাণে কফি পান (দিনে ৩-৪ কাপ) মন মেজাজ, মনোযোগ ভালো করে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়, এটি ক্যান্সার রোধীও বটে।
ফেনায়িত স্বাদু মনোহর কফি ভালো না: ব্লাক কফির নির্দোষ মগে যদি ভারি ক্রিম, সুবাসিত সিরাপ, হুইপড্ ক্রিম কাপ, যোগকরে তা চর্বি ও চিনির ভান্ডার হয়ে উঠে। প্রতিকাপে ৫৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত হতে পারে এত বেশি। এক বেলার খাবারের সমান প্রায়।
সবুজ চা বড় ভালো: সামান্য ক্যাফিনের সন্ধানে থাকলে গ্রীন টি হলো ভালো উত্স। কেবল যে ক্যালোরি মুক্ত তাই নয়, কিছু গবেষণা বলে, সবুজ চা পানে ওজনও কমে। কিভাবে তা ঘটে, জানি না, তবে ক্যাফিনও ক্যাটেবিন নামে অনুপুষ্টির এতে ভূমিকা আছে। দিনে দু’বার সবুজ চা পান ভালো। ককটেল, মদ্য, কুলার সব হলো ক্ষতিকর পানীয়। হালকা বিয়ার ও ভালো না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন